top of page
Writer's pictureSadhguru

প্রাচীন ভারতের সময়

একটি গুরু সান্নিধ্যনে অবধূত প্রাচীন ভারতের সময় কিভাবে পরিমাপ করা হতো তা নিয়ে বোঝাচ্ছিলেন।  তারই কিছু অংশ তুলে দেওয়া হলো। 




সময় নিয়ে কি বলছে প্রাচীন ভারত? সেকেন্ড তো তখন বলা হতো না, সেকেন্ড তো ইংরাজী শব্দ। তাহলে কি ছিল তখনকার সময়ের মাপ। শুধু ইউরোপীয়রা নাকি আমাদের শিক্ষিত করেছে? বর্বরদের দেশ ছিল এই ভারতভূমি? তাহলে সময়ের মাপ কি ছিল সূর্য্যর ছায়া নাকি দিন রাতের ভাগ থেকেই মাপ হত? এসব নিয়েই এই নিবন্ধে অবধূত আলোকপাত করলেন, রেখে দিলেন অনেক প্রশ্ন আর সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হলো আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্যে প্রাচীন ভারতীয় সময়কে ধরবার এক প্রচেষ্টা।


সময় এর মাপ কেমন ছিল প্রাচীন ভারতে তা নিয়ে চর্চা করতে ইচ্ছুক নয় এখনকার মানুষ। অনেকে জানেও না সেসব শব্দ। কারো কারো কাছে ঠাকুমা দাদুদের কাছে শোনা কথা। তাই একটু দেখি আধুনিক বিজ্ঞান কিভাবে সময়কে দেখে তাই বসলাম এই লেখা নিয়ে। বর্তমানে আমাদের সময় চলে ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড থেকে শুরু করে মাইক্রোসেকেন্ড, ন্যানোসেকেন্ড, পিকোসেকেন্ড এই স্তরে তার ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র ভাগ। সে ব্রিটিশ পদ্ধতি হোক বা মেট্রিক পদ্ধতি হোক বা আন্তর্জাতিক পদ্ধতি SI System হোক সব জায়গায় সময়ের একক বা ইউনিট হিসাবে এলো সেকেন্ড। এবার তার বৃহৎ বা ক্ষুদ্র অংশ গুলোর নানা নামকরণ হয়েছে। যা ওপরে বললাম ক্ষুদ্র ভাগ গুলো মিলিসেকেন্ড, মাইক্রোসেকেন্ড, ন্যানো সেকেন্ড, ইত্যাদি। এগুলো দেখলে বুঝবেন সময়ের কত ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র ভাগ। আর ওপরের দিকে হল সেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা(Hour), এখন আমরা দেখি ঘন্টার ৬০ ভাগের ১ভাগ মিনিট, মিনিটের ৬০ভাগের ১ভাগ সেকেন্ড, কিন্তু মিলিসেকেন্ড তাহলে কি? এখানে কিন্তু ৬০এর ভাগ আর থাকল না চলে এলো দশমিক পদ্ধতি বা ডেসিমেল সিস্টেম। তাই ১০০০ মিলিসেকেন্ড মানে ১সেকেন্ড। তাই ক্ষুদ্র ভাগ গুলো এরকম হয়েছে। আবার ১ মাইক্রো সেকেন্ড হল ১মিলি সেকেন্ডের ১০০০ ভাগের ১ভাগ। এই ভাবেই ভাগ গুলো বলা আছে। এই ভাবেই বিজ্ঞান তা মেনে চলছে।

আমরা বিদেশীদের থেকে সময় শিখিনি। সময় সম্বন্ধে ভারতীয়দের জ্ঞান অগাধ। অভাব শুধু চর্চার। শ্রী সিদ্ধাশ্রম এই চর্চায় বহুদিন ধরে নিরন্তর কাজ করছে। 

এখন আসি প্রাচীন ভারতীয় সময়ে। সময় নিয়ে কি বলছে প্রাচীন ভারত? সেকেন্ড তো তারা বলত না। তাহলে কি ছিল তখনকার সময়ের মাপ। শুধু ইউরোপীয়রা নাকি আমাদের শিক্ষিত করেছে? বর্বরদের দেশ ছিল এই ভারতভূমি? তাহলে সময়ের মাপ কি ছিল সূর্য্যর ছায়া নাকি দিন রাতের ভাগ থেকেই মাপ হত?

প্রথম নাম পেলাম লব। কি এই লব? কি বলছে শাস্ত্র? একটি পদ্ম পাতাকে সূচ দ্বারা বিদ্ধ করতে যে সময় লাগে তা হল লব। অর্থাৎ সূক্ষ্ম মাপ পেলাম ১লব। তারপর, ৩০ লবে এক त्रुटि বা ত্রুটি । এখন এই পদ্ম পাতাকে সুচ দ্বারা বিদ্ধ করা অর্থে ব্যাপারটা খুব সহজ হলেও এর ভেতরে যে দেহত্বত্ত ও জ্ঞান লুকিয়ে আছে তা তৎকালীন ঋষিরা গুপ্তই রেখে দেন। এটা একদমই সাধনার গুপ্ত রহস্য। তবে আধুনিক বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলতে গেলে একটা ইলেকট্রিকাল পালস আমাদের খুব সংবেদনশীল ত্বকের থেকে আমাদের স্নায়ু তন্ত্রের মধ্যে দিয়ে যেতে সবচেয়ে কম যে সময়টি নেয়।


৩০ ত্রুটিতে এক কলা। ৩০কলায় এক কাষ্ঠা। শ্রী শ্রী চন্ডী পড়লে দেখা যাবে দেখছি এই কলা কাষ্ঠা থেকেই কালের শুরু। এখন বলা হচ্ছে ৩০ কাষ্ঠায় এক নিমেষ। আবার প্রাচীন শাস্ত্র বলছে এই এক নিমেষ হল চোখের পাতা একবার পড়তে যে সময় লাগে।


এই রকম ৮ নিমেষে এক মাত্রা বা শ্বাস। তার মানে একক বা ইউনিট চলে এলো মানবদেহতে।


৩৬০ শ্বাসে এক নাড়িকা। দুই নাড়িকায়ে এক মুহূর্ত। ৩০মুহূর্তে এক দিন। তাহলে সূর্য্য এলো না। পৃথিবীর ঘূর্ণন, ছায়া কিছুই এলো না।


৭দিন বা অহ-তে এক সপ্তাহ। এর পর ৩০ দিনে ১মাস, আর ১২ মাসে এক বছর। এই অবধি ঠিক আছে।


কিন্তু গোলমেলে ব্যাপার হল শাস্ত্র বলছে অহ মানে দিন। এই রকম মানবের একটি বছর মানে দেবতাদের এক অহরাত্র। ৩৬০ টি অহোরাত্রে ১দৈব বছর। ১২০০০ দৈব বছরে ১যুগ। তাহলে কি মানবের একযুগ আর দৈব যুগ আলাদা? আগে জানতাম ১২ বছরে এক যুগ বলা হয়। দেখলাম না ১২০০০দৈব বছরে এক যুগ। ১০০০ যুগে ১ব্রহ্ম দিন বা রাত। এবার বলছে ৩০ব্রহ্ম দিনে এবং ৩০ ব্রহ্ম রাত মিলিয়ে ১ ব্রহ্ম মাস।


১২ব্রহ্ম মাসে ১ব্রহ্ম বৎসর। আর মাত্র ১০০ব্রহ্ম বৎসর ব্রহ্মার আয়ুষ্কাল।

এবার বলা হচ্ছে ব্রহ্ম, দৈব, মনুষ্য, তিনটি কাল আলাদা। সেই অনুযায়ী মনুষ্য যুগ আর দ্বৈব যুগ আলাদা তো হবেই।

কেমন তা? আসুন দেখি

১ব্রহ্ম দিন X ১০০০ দৈব যুগ X ১২০০০দৈব বছর X ৩৬০ দৈব অহোরাত্র = মানুষের ৪৩২০০০০০০০ বছর।


দেখলাম বিজ্ঞানীরা মোটামুটি বলছেন ৪০২০০০০০০০ বছর লেগেছে সৃষ্টির শুরু থেকে তুষারপ্রবাহ থেকে এককোষী থেকে বহুকোষী হয়ে মাছ সরীসৃপ স্তন্যপায়ী সব করে মানব হতে। এবং পূর্ণাঙ্গ মানব হতে আরও কিছু দিন।


ব্রহ্মার শত বর্ষের প্রথম ৫০বছর হল পদ্ম কল্প আর শেষ ৫০বছরকে বলা হচ্ছে বরাহ কল্প।


এবার হিসাব আরও জটিল ব্রহ্মার প্রতিটি দিন কল্প বলা হচ্ছে আর প্রতিটি রাতকে প্রলয় বলা হয়েছে। এই একটি কল্প আর একটি প্রলয় মিলে ব্রহ্মার একটি সম্পূর্ণ দিন হল। খেয়াল করার ব্যাপার হল দিন বা day বলতে যেভাবে আমরা বলি প্রাচীন শাস্ত্র কিন্তু বারবার দিন ও রাতকে আলাদা করে বলছে।


এই একটি দিন ও রাত মিলে আবির্ভাব হচ্ছে ১৪জন মনুর এবং তাদের তিরোভাব ও হচ্ছে।


শাস্ত্র বলছে ১৪জন মনু শেষ হলে ব্রহ্মার একদিন কাটে। আর এই ১৪জন মনুর নাম দিয়েছে স্বায়ম্ভূব, স্বারচিষ, ঔত্তমী, তামস, রৈবত, চাক্ষুষ, বৈবস্বত, সাবর্ণি, ব্রহ্ম সাবর্ণি, ইন্দ্র সাবর্ণি।





Share this Page

Subscribe

Get weekly updates on the latest blogs via newsletters right in your mailbox.

Thanks for submitting!

bottom of page