আদিশক্তির মহাজাগতিক নৃত্য
শূন্যের গভীরে, যেখানে নীরবতা গায়,
আঁধারের ফিসফিসে, একটি স্পন্দন জাগে,
নিকষ কালো থেকে দ্যুতিময় আলো, মহাজাগতিক বৃত্তে, সর্বত্র সে প্রসারিত
ইচ্ছা, ক্রিয়া,জ্ঞান, ত্রিরূপে আদিশক্তি সমাহিত।
শূন্যতার গর্ভে সে নড়ে,
সৃষ্টি স্পন্দন, বন্য ও মুক্ত,
তার ছন্দে সৃষ্ট কম্পন,
অনুরণিত ধ্বনি নাদের বিবরণ।
তার নৃত্যে ঘোরে নক্ষত্রের মেলা,
নৃত্যের অন্তরঙ্গতায় সময়ের পথ চলা,
ছায়াপথ ঘুরে যায় তার হাতের ঝলকায়,
সে বুনে চলে জীবন ও মৃত্যুর সূতায়।
তার নৃত্য বিশৃঙ্খলা, তবু নিখুঁত রূপ,
মধুর আলিঙ্গনে একটি বিপরীতের সঙ্গীতের সুর ,
সে ঝড়, সে শান্ত, সে ঢেউ অন্তহীন,
মহাবিশ্বের স্পন্দন, বয়ে চলে চিরন্তন।
তার মধ্যেই, ব্রহ্মাণ্ড শেখে চলতে,
প্রতিটি কণা ও পরমাণু নাচে তার সুরেতে,
সে প্রতিটি নক্ষত্রের হৃদস্পন্দন,
সূর্যের শ্বাস, চাঁদের আলো, জগতের হৃদ স্পন্দন।
গভীরতার রহস্য,তার চোখে, তন্ত্রে।
শূন্য থেকে পূর্ণ, সৃষ্টির গোপন কথা তাতে,
জন্ম,ক্ষয় ও লয়, নাচে সে চক্রে, চক্রে,
অলঙ্ঘ মহাজাগতিক টান, তারই ছন্দে ছন্দে।
সে হল মূলের মধ্যে কুণ্ডলীকৃত এক অসীম শক্তি,
শক্তি থেকে ভর, আর ভর থেকে শক্তি,
জীবনকে করে প্রজ্বলিত, এটাই নিত্য শুদ্ধ, নিত্য মুক্ত, নিত্য বুদ্ধ,
নাদ ব্রহ্মাণ্ড গর্জন করে, তার ঘূর্ণনে নিত্য।
সে নৃত্য কেবলই নক্ষত্র ও আলো নয়, নয় জ্ঞানের সূত্র,
সে নৃত্য অন্তরের অন্তস্থলে চেতনার উৎস,
নিজের ছন্দে স্বমহিমায় ছুটে চলে,
গভীর থেকে আরও গভীরে, গভীরতার অন্তস্থলে।
প্রতিটি শ্বাসে, প্রতি প্রাণে, তার নৃত্যই অবিরত,
প্রতিটি স্পন্দনে, বাজে তারই ছন্দ, সেটাই জীবনের ছন্দ।
বাঁধন হারা, সৃষ্টি পারা, ধ্বংসও তার সৃষ্টি,
নিজেকে জানার বাইরে গিয়ে, খুলতে হবে সেই দৃষ্টি।
তার লাস্যে, নৃত্যে, চিরন্তন প্রবাহের ছন্দে,
মহাবিশ্ব নত হয় তারই পায়ের ছন্দে,
তিনি ঝড়, শান্তি, অসীম প্রবাহ,
বিন্দুতে তার লয়, তাতেই সৃষ্টি অস্তিত্বের প্রথম স্পন্দন।